ঢাকা বুধবার, মার্চ ২৯, ২০২৩

Mountain View



বছরের শেষ দিকে ব্রিটেন সফর করবেন ট্রাম্প

Print Friendly, PDF & Email

এই বছরের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিটেন সফর করবেন। শুক্রবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এই সফরের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তবে তা আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় সফর হিসেবে বিবেচিত হবে না। বৃহস্পতিবার সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এর বৈঠকের পরে দুই দেশের কর্মকর্তারা এই সফরের বিস্তারিত চূড়ান্ত করেন।

ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের কর্মকর্তাদের এই বছরের শেষ দিকে সফর আয়োজনের দিনক্ষণের বিস্তারিত চূড়ান্ত করতে নির্দেশ দিয়ে তাদের বৈঠক শেষ করেন। তবে এই সফর রাষ্ট্রীয় হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে না। রাষ্ট্রীয় সফরে রানি দ্বিতীয় এলিজবেথ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিবাদন জানান ও বাকিংহাম প্যালেসে অনুষ্ঠিত হয় রাষ্ট্রীয় ভোজ।

গত বছর ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বিদেশী নেতা হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তখন ট্রাম্পকে রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ জানান থেরেসা। তবে তখন থেকেই ব্রিটেনের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ট্রাম্পের সফর বাতিলের জন্য থেরেসার ওপর চাপ দিয়ে আসছেন। তাদের দাবি ট্রাম্প এই ধরনের আনুষ্ঠানিকতার যোগ্য নন।

ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত ট্রাম্পের ব্রিটেন সফর গত মাসে হঠাৎ করে বাতিল হয়ে যায়। এরপরই সুইজারল্যান্ডের দাভোসে এই দুই নেতার বৈঠককে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছিল।

ফেব্রুয়ারির ওই সফর বাতিল করার জন্য বিগত ওবামা প্রশাসনকে দায়ী করেন ট্রাম্প। ব্রিটেন পুরনো মার্কিন দূতাবাস ভবন ‘চিনাবাদামের’ দামে বিক্রি করে দেওয়াকে দায়ী করে নতুন ভবন উদ্বোধন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তারপরও এই সফর বাতিলকে শিথিল হয়ে পড়া ব্রিটেন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ইঙ্গিত বলে বিবেচনা করছিলেন অনেকে। অনেকেই মনে করে থাকেন, ব্রিটেনের দক্ষিণপন্থী ব্রিটেন ফার্স্ট গ্রুপের মুসলিম বিদ্বেষী ভিডিও ট্রাম্প রিটুইট করাই সম্পর্ক শিথিল হওয়ার জন্য দায়ী। তবে সেই গুঞ্জনকে উড়িয়ে দিয়ে ব্রিটেনকে ‘ভালোবাসেন’ বলে দাবি করে ট্রাম্প বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অটুট থাকবে।

ব্রিটেনের আইটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ব্রিটেন ফার্স্টের ভিডিও রিটুইট করার জন্য ক্ষমা চাইতেও প্রস্তুত তিনি। শুক্রবার দাভোসে ধারণ করা সাক্ষাৎকারের পূর্ণাঙ্গ ভিডিও ব্রিটেনে আগামী রবিবার সম্প্রচারিত হবে। ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আপনারা যদি বলেন তারা খারাপ মানুষ, বর্ণবাদী মানুষ, তাহলে আমি ক্ষমা চাইবো। যদি আপনারা চান তাহলে আমি তা করি।’

গত বছর ওই টুইট করে ট্রাম্প থেরেসা মেকে নিজের দেশের সন্ত্রাসীদের দিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এরপর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এর সমালোচনা করলে বিতর্ক নতুন মাত্রা পায়। থেরেসা বলেছিলেন, ব্রিটেন ফার্স্টের ভিডিও রিটুইট করা যে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তা পরিষ্কার।

ওই টুইটের বিষয়ে ট্রাম্প সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রথাগত ইসলামিক সন্ত্রাসের বেশ কয়েকটি নজির ওই ভিডিওতে ছিল। আমি এটা করেছিলাম কারণ আমি প্রথাগত ইসলামিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমার কঠিন বিশ্বাস রয়েছে। আর এটা ছিল সেই যুদ্ধের অংশ।

ট্রাম্পের টুইট করা ভিডিওতে, যাচাই না হওয়া ফুটেজে এক তরুণ ডাচকে একজন ‘অভিবাসী মুসলিম’কে মারতে দেখা যায়। আরেকটি ভিডিওতে মেরি’র মূর্তি ভাঙতে দেখা যায়। তৃতীয় ভিডিওতে ২০১৩ সালে মিসরের দাঙ্গায় ছাদের ওপর থেকে একজনকে ফেলে দিতে দেখা যায়।

ট্রাম্প দক্ষিণপন্থী ওই গোষ্ঠীগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তাদের সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তাদের মতো হতেও চাই না। ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, ব্রিটেন ফার্স্টের টুইট করা তাদের পক্ষ হয়েই কথা বলার শামিল।

ফেসবুক মন্তব্য