ডেস্ক রিপোর্ট
বাঙালির বহুল পরিচিত আলু ভাজা, যা কিনা ফাস্টফুডের দুনিয়াতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নামে পরিচিত তার আসল নামটি আসলে কি? নামের ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে যে তথ্য বের হয়ে এলো তা রীতিমতো ঐতিহাসিক; ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের নাম কিনা হতে পারত ব্রেঞ্চ ফ্রাই? শোনা যাক তাহলে নামকরণের সেই অনাবিষ্কৃত ও মজাদার ইতিহাসটুকু।
জো গেরাড নামের এক বেলজিয়ান সাংবাদিকের ভাষ্যমতে, বেলজিয়ামের ফ্রান্স সীমান্তবর্তী মিউস নামক একটি ভ্যালির অধিবাসীদের পছন্দের খাবার ছিল মাছ ভাজা বা ফিশ ফ্রাই। তারা সমুদ্র থেকে মাছ শিকার করত এবং তা বিক্রয় করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করত, ও ভুরিভোজ করত। সপ্তদশ শতকে বেলজিয়ামে স্মরণকালের সেরা ঠাণ্ডা পরাই মিউসের সবগুলো জলাশয়, নদী ও সমুদ্র বরফে ঢাকা পরে। এই যখন অবস্থা, তখন জীবিকানির্বাহ ও উদরপূর্তির জন্য তারা মাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে আলুতে দৃষ্টিপাত করে। ফলে মাছ ভাজার স্থান দখল করে আলু ভাজা।
এরপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ব্রিটিশ-আমেরিকান সৈন্যরা যখন ফ্রান্সে অবস্থান গ্রহণ করে তখন তারা যুদ্ধ করতে করতে ফ্রান্সের সীমানা পার হয়ে বেলজিয়ামের মিউস ভ্যালিতে প্রবেশ করে না বুঝেই। নতুন স্থানে এসে নতুন খাবার হিশেবে তারা পায় বহুল ব্যবহৃত আলু ভাজাকে। যুদ্ধের ময়দানে প্রাপ্ত এই একমাত্র খাবারের নামের পিছনে ছোটার সময় সৈন্যদের হাতে ছিল না। তাই তারা একে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বলে ডাকতে থাকে। যেহেতু তারা ফ্রান্সে এসেছে যুদ্ধ করতে, এবং তারা যেহেতু জানে না যে তারা ফ্রান্স পেরিয়ে তারা বেলজিয়ামে ঢুকে পড়েছে, তাই আলু ভাজাকে common ও popular শব্দ হিশেবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হিসেবে ডাকাই ছিল সেই সময়ে তাদের কাছে যুক্তিযুক্ত। অর্থাৎ আপ্যায়ন করলো বেলজিয়াম, কিন্তু নাম ফুটলো ফ্রান্সের !
পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী সমাজ–সংস্কৃতিতে ব্রিটিশ-আমেরিকা-ফ্রান্সের সর্বব্যাপী যে প্রভাববলয় তৈরি হয় তাতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নামটিই ছড়িয়ে সকলের মাঝে, যার অর্থ সাধারণের কাছে এমনটি দাঁড়াই যে, এটি ফ্রান্সে প্রথম উৎপাদন হয় বলে এর নাম ফ্রেঞ্চ ফ্রাই।
তাই বাঙালির আলু ভাজা ও বেলজিয়ামবাসীর পটেটো ফ্রাই/ব্রেঞ্চ ফ্রাই বিশ্বে আজ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নামেই পরিচিত।