মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনীতি মাঝি ছাড়া নৌকার মতো আল্লাহর ওয়াস্তে চলছে। বড় দুই দলই মিলেমিশে ভাগ বাটোয়ারা করে খাচ্ছে। দুই দলের মধ্যে ভাই-বন্ধু সম্পর্ক বিরাজ করছে। ২০ দল ঘোষিত কর্মসূচি পালন করছে না বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা এখন টাঙ্গাইলকে ঢাকা বিভাগে রাখার আন্দোলনের জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে একত্রে কাজ করছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী জেলা আওয়ামীলীগের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বিতর্কিত ‘খান সাম্রাজ্যের’ অধিপতি ৪ ভাই বর্তমানে আত্মগোপনে থাকলেও তাদেরই ভয়ে জেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে জেলা সম্মেলন করতে সাহস পাচ্ছে না। যদিও প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের অনুপস্থিতিতে জার্মান আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান(ছোট মনি)’র নেতৃত্বে তৃণমূল নেতাকর্মীরা একাট্টা হয়ে কাজ করছে। সংক্ষিপ্তকারে হলেও দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটির অধিকাংশ নেতাই ‘খান পরিবারের’ সুবিধাভোগি হওয়ায় তাদের অনিচ্ছার কারণে জেলা সম্মেলন করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগি নেতারা মনে করছেন খান পরিবারের সদস্যরা অচিরেই ফিরে আসবেন। তারা ফিরে এসে আবার স্বমূর্তিতে আওয়ামীলীগের হাল ধরবেন। তাদের অর্থে লালিত অনেক নেতাই সম্মেলন করার জন্য কোন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না, জেলা সম্মেলনও হচ্ছেনা। অথচ পুলিশ তাদের (খান পরিবারের ভাইদের) গ্রেপ্তার করার জন্য সর্ব শক্তি নিয়োগ করেছে। বর্তমান নেতাদের অণীহার কারণে অন্য নেতৃবৃন্দ সম্মেলন নিয়ে দিনক্ষণ ঠিক করতে পারছেন না।
সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও টাঙ্গাইলে সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে না। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে দলকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারছে না। টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঠিক নেতৃত্ব না থাকায় রাজনৈতিকভাবে দু’টি দলই মুখ থুবড়ে পড়েছে। দুই দলের কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ জেলার শীর্ষ নেতারা আপোস করে রাজনীতি করছে। নেতৃস্থানীয়রা একে অপরের আস্থাভাজন হয়ে ‘হালুয়া-রুটি ভাগবাটোয়ারা করে খাচ্ছে। যে কারণে টাঙ্গাইলে দু’টি দলেরই কেন্দ্রের নির্দেশ সঠিকভাবে পালন হয় না। ১৪ দলের শরিক দলগুলোর অনেক নেতাই ‘খান সাম্রাজ্যের’ আস্থাভাজন, তাই তারাও মাসের পর মাস অপেক্ষা করছেন ‘খান ভাইদের’ ফিরে আসার। সেজন্য দলীয় বা জোটগত কার্যক্রমও চলছে ঢিমেতালে। সব রাজনৈতিক দলের এহেন অবস্থায় টাঙ্গাইলের রাজনীতি চলছে আল্লাহর ওয়াস্তে।
টাঙ্গাইলে গত ২২ মার্চ হরতালের সমর্থনে মিছিলের প্রস্তুতিকালে পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহীন, জেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম বাবু, শহর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মারুফ সরোয়ার, বিএনপি কর্মী আমিনুর, সোহাগ, ছাত্রদল কর্মী আব্দুল্লাহ, রাসেল, যুবদলের ওয়ার্ড সভাপতি সজলসহ ২৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগি নেতাদের হস্তক্ষেপে কোন মামলা হয়নি বলে শহরে প্রচারণা রয়েছে। এরআগে গত ২২ জানুয়ারি শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করার প্রস্তুতিকালে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ পাহেলী, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুল হক, শহর ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ সারোয়ার, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক কেএম তৌহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ ১০ জনকে আটক করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল জেলায় ২৫ জানুয়ারি সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে জেলা বিএনপি। পরে রাজনৈতিক সমঝোতায় তাদের ১০জনকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং ২৫ জানুয়ারির হরতাল প্রত্যাহার করা হয়। গত ৪ মার্চ রাত ৯ টার দিকে শহরের কুমুদিনী মহিলা কলেজ মোড়ে খালি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে গত ১০ মার্চ রাতে ওই এলাকার নিজ বাসা থেকে জেলা যুবদলের সভাপতি আহমেদুল হক শাতিলকে পুলিশ আটক করে রিমান্ডে নেয়।
ওই দুটি ঘটনার পর থেকে জেলা বিএনপি নেতারা পুলিশের আটক ও মামলার ভয়ে রাজপথ ছেড়ে দেয়। বিএনপির টানা অবরোধে তাদের সেইভাবে আর রাজপথে নামতে দেখা যায় না। কিছু নেতাকর্মী সকালে একত্র হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চা’র আড্ডায় মিলিত হয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় ও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করেন।
বিএনপির কর্মীরা জানায়, কতিপয় নেতা রাজপথে না থেকে ছবি তুলে শেখ হাসিনার ডিজিটাল ফেসবুকে দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর জেলা বিএনপির এক যুগ্ম-সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নেতৃত্বে বিএনপি সমর্থিত কিছু নেতা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করে চলেছেন। এ দু’নেতার কিছু কর্মীসমর্থক প্রতিদিন ওই নেতার কার্যালয়ে গিয়ে বসেন, বিভিন্ন কাজ ও সুযোগ সুবিধার ভাগবাটোয়ারা ও বিভিন্ন কর্মসূচির নামে টাকা উত্তোলন করে চলেছেন। এক সময়ের জাসদ কর্মী বর্তমানে জেলা বিএনপির ওই বিতর্কিত যুগ্ম-সম্পাদক ওয়ান ইলেভেনের সময় বিভিন্ন পদে থেকে ব্যাপক সুবিধা আদায় করেন। অথচ সে সময় সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়িয়েছেন। এখনও বিএনপির বিতর্কিত সেই নেতা খালেদা জিয়ার ডাকা হরতাল-অবরোধে রাজপথে না থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে ‘টাঙ্গাইল জেলা ঢাকা বিভাগে রাখার দাবি বাস্তবায়ন কমিটির’ কাজ করে যাচ্ছেন।
এছাড়া অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জেলা বিএনপি মূলত তিনটি গ্র“পে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, বর্তমান সভাপতি ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ শামসুল আলম তোফা এই তিন গ্র“পে বিভক্ত। এই তিন গ্র“পের কারণে বিএনপি টাঙ্গাইল জেলায় সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে পারছে না। এদের তিনজনের নেতৃত্বের দুর্বলতা ও গ্র“পিংয়ের সুযোগে বিএনপির কতিপয় নেতা আওয়ামীলীগের সঙ্গে আঁতাত করে জেলার ভাগবাটোয়ারা করে চলছে।
বিএনপির আন্দোলন বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক বলেন, বিএনপির সকলস্তরের নেতাকর্মী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সরকারের মামলা হামলা জুলুম নির্যাতন উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে আছে নেতাকর্মীরা। তার নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারপরও আন্দোলন-সংগ্রামে আছেন, থাকবেন। ছাত্রদলের যারা এই আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখবে তাদেরকে ভবিষ্যতে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তোফা জানান, পুলিশ বিনা উস্কানিতে ২০ দলীয় জোট নেতাদের উপর গত ২২ মার্চ লঠিচার্জ করে। এরআগে পুলিশ দলীয় ১০ নেতাকর্মীকে নাশকতার ভূয়া আশঙ্কায় আটক করে পরে ছেড়ে দেয়। মনগড়া অভিযোগে জেলা যুব দলের সভাপতি আহমেদুল হক শাতিলকে আটক করে রিমান্ডে নিয়েছে। আওয়ামী দুঃশাসনে জেল-জুলুমের ভয়ে নেতাকর্মীরা মাঠে নামছে না। এখানে সমঝোতার রাজনীতি নয় বরং বাকশালী কায়দায় জুলুম-অত্যাচারের রাজনীতি চলছে। খান ভাইদের আস্থাভাজনদের সহযোগিতার কথা এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, আতœীয়তা তো আর অস্বীকার করা যায়না। এক আতœীয় বিপদে পড়–ক অন্যজন তা অবশ্যই চাইবে না। এ ক্ষেত্রে রাজনীতির গন্ধ না খোঁজাই ভাল।
অপরদিকে, শাসকদল আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক দুর্বলতার মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে জেলায় রাজনীতি করে চলেছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের চরম দুর্বলতার কারণে জেলায় মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কর্মীসমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আশা করছেন। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা করতে পারেনি।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব ও নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে উপজেলা আওয়ামী লীগ তাদের মতোই কাজ করে যাচ্ছে। এতে জেলার সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের দূরত্ব বেড়েছে। জেলার ঘাটাইল, দেলদুয়ার, নাগরপুর, ভূঞাপুর ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় এখনও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া সখীপুর উপজেলায় সম্মেলন হলেও ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করায় পূর্ণঙ্গ কমিটির নাম ঘোষণা এখনও করা হয়নি। এখানে সম্মেলনের কোন নামই নেয়নি জেলা আওয়ামী লীগ। বাসাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল গত ১৯ মার্চ(বৃহস্পতিবার) কিন্তু আগের দিন(১৮ মার্চ) দুপুরে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সম্মেলন স্থগিত করা হয়। সম্মেলনের স্থান বাসাইল থেকে টাঙ্গাইল শহরে নিয়ে আসা এবং কাউন্সিলরদের তালিকা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সম্মেলন স্থগিত করা হয় বলে আওয়ামীলীগ নেতারা জানান।
দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগের দুই গ্র“প মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে কর্মীসমর্থকরাও। ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপি খন্দকার আবদুল বাতেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার ফজলুল হক ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মল্লিক দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। খন্দকার আবদুল বাতেন নির্বাচিত হওয়ার পর কোণঠাসা হয়ে পড়েন তাঁরা। এমপি আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও সম্পর্কের আর উন্নতি হয়নি। গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে খন্দকার আবদুল বাতেন আবারও এমপি নির্বাচিত হন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার আস্থাভাজন মঈন সিদ্দিকীকে মনোনীত করেন। সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মল্লিক ও ডুবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তাদের বাদ দিয়ে মঈন সিদ্দিকীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। নির্বাচনে মঈন সিদ্দিকী বিপুল ভোটে হেরে যান। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায়। দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীন কোন্দলে পাল্টাপাল্টি সভা-বর্ধিত সভা আহ্বান ও চূড়ান্ত রেষারেষিতে জেলা আওয়ামীলীগের নেতারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বর্ধিত সভা করে কমিটি করবে বলে ঘোষণা দেন। কিন্তু কমিটি গঠন হয়নি, উভয় গ্রুপের দূরত্ব এখন যোজন যোজন।
ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের এমপি আমানুর রহমান খান রানা বর্তমানে আতœগোপনে থাকায় সেখানে সম্মেলন হচ্ছে না। সেখানে দু’টি আহ্বায়ক কমিটি চরম বিরোধিতার মুখে কাজ করে যাচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগ এখানে দুই গ্র“পের সমন্বয়ে একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেছে।
ভূঞাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দু’টি আহ্বায়ক কমিটি দীঘদিন যাবত কাজ করছে। এখানে এমপির সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের বিরোধিতার কারণে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে কাজ করতে পারছে না। জেলা কমিটির নেতারাও এখানে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। নাগরপুরে তীব্র অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে জেলা আওয়ামী লীগ সম্মেলন করতে পারছে না। টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ইউনিয়নগুলোর সম্মেলন ধীরগতিতে চলছে।
কালিহাতী উপজেলার এমপি এখনও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার হলেও কালিহাতীর আওয়ামীলীগাররা তারই অনুগত। জেল থেকে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়ায় এবং সাংগঠনিক অবস্থা ভাল থাকায় সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা ভাল থাকায় কারণে মধুপুর, ধনবাড়ী, গোপালপুর ও মির্জাপুর উপজেলায়ও সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে।
এসব বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খান বলেন, উপজেলাগুলোতে সম্মেলনের কাজ এগিয়ে চলছে। মূলত অভ্যন্তরীণ গ্র“পিংয়ের কারণে সম্মেলন করতে সমস্যা হচ্ছে। আর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান ফারুক বলেন, ছয়টি উপজেলার সম্মেলন শেষ হয়েছে। আরও দুইটি উপজেলার সম্মেলন শেষ করার প্রস্তুতি চলছে। সাতটি উপজেলার সম্মেলন শেষ হওয়ার পরেই জেলা সম্মেলন করা যাবে। জেলার সম্মেলনের জন্যে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কাজ শুরু করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।