ক্যাম্পাস প্রতিবেদক : ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও ইউনূস সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে সামাজিক ব্যবসার সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়ে ১ জুন ২০১৫ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হলো সোশ্যাল বিজনেজ একাডেমিক সম্মেলন (এসবিএসি) ২০১৫।
সম্মেলনটির এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য ছিলো ‘শিক্ষায় সামাজিক ব্যবসার প্রয়োগ’। দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে সকাল ১১ টায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস সম্মেলনের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন এবং সম্মেলনটির আয়োজক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. শরিফ নুরুল আহকাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং এসবিএসসি ২০১৫ এর স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান জনাব এস এম এমদাদুল ইসলাম, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান চৌধুরী এবং ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোর্শেদ।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এ সম্মেলনটির আয়োজন করায় অধ্যাপক ইউনুস আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে বিশ্ব থেকে দারিদ্রতা নির্মূল করা সম্ভব বলে তিনি মত প্রকাশ করেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি আরও বলেন, সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি সামাজিক ব্যবসায় অবদান রাখলে অর্থ কোন সমস্যা নয়। এর মাধ্যমে সমাজকে সুরক্ষার পাশাপাশি নিজেকের সুরক্ষিত করা যায়। প্রকৃতি খুবই সোজা আমরা সেটিকে কঠিন করে তুলি, তাই সৃজনশীল হয়ে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এই দেশকে একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা সম্ভব।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। তিনি সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারণা প্রদান করেন এবং নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এ বিপ¬বে ছাত্র-শিক্ষক সকলকে অংশগ্রহণের আহবান জানান। তিনি আরও বলেন ইইউ এ বিষয়ে নের্তৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে তরুণ চেতণায় উদ্যোক্তা হবার সাহস সঞ্চারিত হবে এবং এর মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যেও একটি বন্ধন তৈরী হবে।
এসবিএসি ২০১৫ এর দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালাতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। প্রথমটি প্যানেল আলোচনা, যেখানে ভবিষ্যত প্রজন্মের মনে সামাজিক ব্যবসার ধারণা তৈরীতে সামাজিক ব্যবসা প্রসারে একাডিমিয়ার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। সম্মেলনের বিষয়বস্তু নিয়ে আরো একটি গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সামাজিক ব্যবসার ব্যাপ্তি, প্রসার এবং গভীরতা ভালোভাবে অনুধাবনে শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষাবিদ এবং গবেষকদের উৎসাহিত করতে এসবিএসি ২০১৫ তে একটি বড় আয়োজন ছিল তরুণ শিক্ষকদের মধ্যে রিসার্চ পেপার প্রতিযোগিতা। যেখানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে সেরা তিনজনকে ১ম, ২য় ও তয় পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১ম পুরস্কার পান ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিস. পারিসা ইসলাম , ২য় পুরস্কার পান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনাব সাদ মো: মারুফ হোসেন এবং ৩য় পুরস্কার পান ইউল্যাব এর জনাব নিয়াজ এম পাটওয়ারী।
তরুণ শিক্ষার্থীদের সামাজিক ব্যবসায় একত্রিত করার মাধ্যমে দেশের সামাজিক সমস্যার সমাধানে উৎসাহিত করতে ‘সামাজিক ব্যবসা পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা’র আয়োজনও ছিলো। এ প্রতিযোগিতায় দেশের শীর্ষস্থানীয় সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়, যার মধ্যে চুড়ান্ত পর্বে ৮ টি পরিকল্পনা পুরষ্কারের জন্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এতে ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ১ম, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি ১ম রানার আপ, ২য় রানার আপ হয় ডিআইউ ও জাবি’র আইবিএ।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি সোশ্যাল বিজনেস একাডেমিক সম্মেলন (এসবিএসি) ২০১৫ বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে সামাজিক ব্যবসার একটি তরঙ্গ ছড়িয়ে দিবে এমনটিই আশা সুধি মহলের। সম্মেলনে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানীত সদস্যবৃন্দ, দেশী-বিদেশী আমন্ত্রিত অতিথীবৃন্দ, বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।