নির্বাচন ঠেকাতে মরিয়া ফ্যাসিবাদ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রায়ও বিলম্বিত করতে পারে শিডিউল
নিয়ন্ত্রিত বাফার স্টেট বানাতে চায় ভারত
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন- কেন আওয়ামী লীগ ও ভারতের নীতিনির্ধারক মহল নির্বাচনের বিষয়ে নীরব; এমনকি অনাগ্রহী। কেনই-বা একের পর এক রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড বা অন্তর্ঘাতী ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। একদিকে চলছে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া; অন্যদিকে পুরনো ক্ষমতাগোষ্ঠীর টিকে থাকার লড়াই। এ দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে নির্বাচন- যা এখন একদিকে গণতান্ত্রিক দাবি; অন্যদিকে রাজনৈতিক আতঙ্ক।
বাংলাদেশের নির্বাচন ও রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে দিতে চাইছে না পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও ভারত। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এখন যেখানে বাংলাদেশে ‘স্বচ্ছ নির্বাচন’ চায়, কিন্তু ভারত তা বিলম্বিত করতে চায়, যাতে অন্তর্বর্তী সরকার ‘ভারত-ঘনিষ্ঠ পুনর্গঠন’ সম্পন্ন করে। ইউরোপ, আমেরিকা, চীন, তুরস্ক ও রাশিয়া অপেক্ষায় আছে, নতুন নির্বাচনী সরকার এলে তারা অবকাঠামো, প্রতিরক্ষা ও বিনিয়োগে প্রবেশ করবে, যা ভারত ও আওয়ামী লীগ প্রতিহত করতে চায়।
আওয়ামী লীগ কেন নির্বাচন চায় না : বিচারের ভয় আওয়ামী লীগের নির্বাচন না চাওয়ার প্রধান কারণ। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মানবতাবিরোধী অপরাধ, দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খুন-গুমের অভিযোগে শতাধিক মামলা চলমান। দলটি মনে করে, নতুন নির্বাচন মানে এসব অপরাধে জবাবদিহি ও আইনি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়া। নির্বাচন মানে এ অপরাধগুলোর দায় নির্ধারণ ও বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হওয়া, যা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের জন্য সরাসরি অস্তিত্বের হুমকি।
দ্বিতীয়ত, দলটি এখন মারাত্মক সাংগঠনিক ভাঙনের মুখে। জেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত একাধিক উপদল, সিন্ডিকেট এবং ‘ঘনিষ্ঠ পরিবারের’ বাইরে থাকা নেতারা একে অপরের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। এমন অবস্থায় দ্রুত নির্বাচন মানে নিশ্চিত পরাজয়। দলীয় ভাঙন রোধ আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের ভেতরকার উপদল, সিন্ডিকেট ও ‘নতুন নেতৃত্ব’ মাথা তুলে দাঁড়াবে- এটি শেখ হাসিনা-ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠী (বিশেষত জয়-পলক সিন্ডিকেট) কোনোভাবেই চায় না। তাই দলীয় পুনর্গঠনের সময় না নিয়ে তারা ‘অন্তর্বর্তী সময় বাড়ানোর’ কৌশল নিয়েছে।
আরও একটি বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগের ভেতরে যেসব কর্পোরেট ও আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সুবিধা পেয়েছে, তারা এখন চায় না যে নির্বাচন হলে নতুন রাজনৈতিক শক্তি এসে তাদের অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক ভেঙে দিক। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে তারা দল পুনর্গঠনের সময় পাবে না।
ভারতের কৌশলগত অনাগ্রহ : নিয়ন্ত্রণের রাজনীতি
ভারত এখন বাংলাদেশে নির্বাচনের চাইতে ‘স্থিতিশীলতা’ শব্দটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। দিল্লি মনে করে, নির্বাচন হলে নতুন নেতৃত্ব আসতে পারে, যারা জুলাই জাতীয় সনদের নীতির মতো সার্বভৌম অর্থনীতি ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে পারে, যা ভারতের আঞ্চলিক আধিপত্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ভারতের মূল কৌশলগত উদ্দেশ্য তিনটি- প্রথমত, বাংলাদেশে প্রভাব বজায় রাখা। তিস্তা প্রকল্প, আদানি বিদ্যুৎ চুক্তি, বন্দরের ব্যবহার ও ট্রানজিটসহ নানা অর্থনৈতিক-ভূরাজনৈতিক চুক্তি ভারতের কর্পোরেট স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ। উত্তর-পূর্ব ভারতের সীমান্ত স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশকে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত বাফার স্টেট’ হিসেবে রাখতে চায় দিল্লি। উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার বিবেচনায় দিল্লি চায় না এখনই এমন কোনো সরকার আসুক, যারা সীমান্ত চুক্তি, নদী-বাণিজ্য বা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পুনঃআলোচনা করতে পারে। এর মধ্যে সরকার ভারতের সাথে আগের সরকারের করা ১০টি চুক্তি পুনর্বিবেচনার খবর বের হয়েছে। তৃতীয়ত, চীনা প্রভাব ঠেকানো। চীন, তুরস্ক বা রাশিয়ার বিনিয়োগ ও কৌশলগত সম্পর্ক যেন নির্বাচনী সরকার এসে পুনরায় সক্রিয় না করে, সেটি নিয়ে দিল্লির উদ্বেগ রয়েছে।
এসব কারণে দিল্লি চায়, অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘমেয়াদি ‘রূপান্তরকাল’ বজায় রাখুক, যতদিন পর্যন্ত ভারতের অনুকূলে নতুন কাঠামো স্থাপন না হয়। ভারত মনে করে, স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে। দিল্লির ধারণা, তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকলে তাদের প্রভাব সীমিত হবে, কিন্তু যদি দীর্ঘ ‘পরিবর্তনকাল’ ধরে রাখতে পারে, তবে বাংলাদেশে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ (বিদ্যুৎ, বন্দর, ট্রানজিট, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা) আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
দিল্লির চোখে, ‘নির্বাচন’ মানেই নতুন নেতৃত্ব, নতুন নীতি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ও জুলাই জাতীয় সনদ বাংলাদেশের সার্বভৌম অর্থনীতি ও স্বনির্ভর পররাষ্ট্রনীতির কথা বলছে, যা ভারতের জন্য অস্বস্তিকর।
অর্থনৈতিক স্বার্থ তথা চুক্তি, লবিং ও কর্পোরেট সংযোগ ভারতের কৌশলের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত। আদানি বিদ্যুৎ চুক্তি, তিস্তা অববাহিকা প্রকল্প, বন্দর ব্যবহারের চুক্তি; এমনকি ডিজিটাল অবকাঠামো (ডাটা, পেমেন্ট সিস্টেম)- সবই ভারতীয় কর্পোরেট ও পুরনো আওয়ামী আমলার যৌথ স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত। আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র, তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো, ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম বা বন্দর ব্যবহারের মতো খাতে ভারতীয় ও দেশীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর যৌথ স্বার্থ রয়েছে। নির্বাচন হলে এসব চুক্তির পুনর্মূল্যায়নের আশঙ্কায় তারা অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘায়নেই স্বস্তি খুঁজছে।
এছাড়া ভারতীয় ও দেশীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী চায় অন্তর্বর্তী সরকারের ছায়ায় ‘স্থিতি’ বজায় থাকুক- যাতে নতুন রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতায় এসে তাদের আর্থিক প্রভাব ভেঙে দিতে না পারে। বিশেষ করে ইসলামিক রাজনৈতিক শক্তির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাকে দিল্লি ভীতির চোখে দেখে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ স্বচ্ছ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিলেও ভারত সেটি বিলম্বিত করতে চায়। কারণ দ্রুত নির্বাচন হলে বাংলাদেশ তার নীতি ও বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বে নতুন ভারসাম্য তৈরি করতে পারে, যেখানে চীন ও মধ্যপ্রাচ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
বাংলাদেশে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার এ প্রবণতা কেবল রাজনৈতিক নয়, এটি ক্ষমতা, অর্থনীতি ও ভূরাজনীতির জটিল সমীকরণ। কিন্তু ইতিহাস বলে, কোনো দেশেই গণআকাক্সক্ষাকে দীর্ঘদিন দমন করা যায় না। বাংলাদেশের মানুষ যেমন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পরিবর্তন এনেছে, তেমনি তারা একদিন নিজেদের ভোটাধিকার ও রাষ্ট্রের পূর্ণ সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করবে- এটাই সময়ের দাবি।
মামলা ও বিচারের প্রভাব
অন্তর্বর্তী সরকারের মামলাগুলো নির্বাচনকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। প্রথমত, আওয়ামী লীগ ও মিত্র দলগুলোর নেতাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অযোগ্যতা সরাসরি প্রভাব ফেলছে সিদ্ধান্তে। এপি নিউজের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যদি প্রধান রাজনৈতিক নেতারা মামলা, সাজা বা জরিমানা পান, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন বা দলীয় নেতৃত্ব দুর্বল হয়, তাহলে নির্বাচনে যাবার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো আগ্রহ থাকবে না। কিছু মামলার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের দাবি পর্যন্ত উঠেছে- এটা ট্রান্সফরমেটিভ ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দলের বিচারের জন্য আইনে যে সংশোধনী আনা হয়েছে, তাতে জার্মানি বা ইতালির ফ্যাসিবাদী ও নাৎসিবাদী দলের মতো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হবার ঝুঁকি রয়েছে।
নেতৃত্বের নির্বাসন বা পলায়ন লুটপাটের প্রচারণা ও ভোটে অনুপস্থিতির প্রভাব থাকতে পারে নির্বাচনে। শেখ হাসিনাসহ কিছু শীর্ষনেতার নির্বাসন বা বিদেশে আশ্রয় নেয়া নির্বাচনকে বিকল করে। এতে দলের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি হলে কৌশলগত সমন্বয় ও ভোটার-প্ররোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর মধ্যে নানা ধরনের ফৌজদারি অপরাধের জন্য আটক-গ্রেপ্তার দলের নেতাদের ওপর ভয়-চাপ তৈরি করেছে। বিস্তৃত গ্রেফতার, মামলা বা ব্যবহৃত আইনের বিস্তৃতি- সবই সমর্থকদের সামনে ‘ভয়’ তৈরি করে; মিটিং, কর্মসূচি, প্রচার কষ্টকর করে তোলে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
এছাড়া দলের কার্যক্রম নিষেধাজ্ঞার কারণে আওয়ামী লীগ মাঠে নামতে পারছে না। অফিসিয়ালভাবে কোনো দল বা দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলে সেই দলের ভোটাররা সংগঠিতভাবে ভোটের জন্য মাঠে নামতে পারবে না, ফলপ্রসূ প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে দলের কার্যক্রমে বিধিনিষেধের প্রভাব উঠে এসেছে।
বিচার ও আপিল প্রক্রিয়া প্রশাসনিক ও আইনি টাইমলাইন আওয়ামী লীগের জন্য একটি সমস্যা। বড় মামলার ধারাবাহিক শুনানি ভোটের আগে হলে নেতারা মামলার প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত থাকবেন বা কারাগারে থাকবেন; অন্যদিকে দ্রুত-শুনানি বা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ভোটের ন্যায্যতা প্রশ্নের সম্মুখীন করতে পারে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেও এতে স্বচ্ছতার প্রশ্ন ওঠে।
অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক লেজিটিমেসির ক্ষতিও পতিত ফ্যাসিবাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। আটলান্টিক কাউন্সিলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি নির্বাচন হয়, যখন বড় রাজনৈতিক দল অংশ না নেয় বা বহু শীর্ষনেতা অযোগ্য বা নির্বাসিত থাকে, তাহলে দেশীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নির্বাচনের লেজিটিমেসি দুর্বল হয়। এতে সহায়তা, বিনিয়োগ ও কূটনৈতিক স্বীকৃতি প্রভাবিত হতে পারে বলে হিসাব করছে আওয়ামী লীগ নেতারা।
তবে নির্বাচনের ব্যাপারে প্রকৃত প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে মামলার ধরন ও সময়কালের ওপর, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বা চাপের ওপর এবং যে রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেবে, তাদের ব্যাপক সংগঠিত প্রচারের ওপর।
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরাতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রভাব
সুপ্রিম কোর্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যে মামলা চলমান, তার রায়ে নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে কিনা- এটিও আলোচনায় রয়েছে। ২০১১ সালের সংশ্লিষ্ট রায় সংশোধন বা বাতিল করতে আদালত যদি নির্দেশ দেন, তাহলে সেটি প্রায় নিশ্চিতভাবেই নির্বাচন শিডিউলকে প্রভাবিত করবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
প্রশ্ন হলো- এ রায় কেন কীভাবে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। আপিল বেঞ্চ যদি ১৩/১৫তম (যেসব সংশোধনী প্রাসঙ্গিক) সংশোধনী বা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার ওপর নতুন ব্যাখ্যা দেন এবং তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরাতে বলেন, তাহলে সংসদকে (অথবা রাষ্ট্রকে) সেই বিধান বাস্তবায়নের জন্য আইন তৈরির নির্দেশ বা সময়সীমা দিতে পারে। ফলে নির্বাচনের বর্তমান শিডিউল আপাতত স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
একইভাবে বেঞ্চ যদি ২০১১ সালের মূল রায়ই অপরিবর্তিত রাখেন (অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা অবৈধই রাখে), তবে নির্বাচন আগের টার্গেট অনুযায়ী গেলেও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, দলের অংশগ্রহণ ও বৈধতা নিয়ে বিতর্ক বাড়তে পারে।
বলা যায়, দুটি প্রধান ফলাফল ও তাদের মৌলিক প্রভাব পড়বে নির্বাচনে। প্রথমত, সুপ্রিম কোর্ট যদি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিস্থাপনের নির্দেশ দেন, তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন পিছিয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে, যতক্ষণ না সংশ্লিষ্ট আইনি ও প্রশাসনিক কাঠামো (কী ধরনের তত্ত্বাবধায়ক, কে নিযুক্ত করবে, কতদিনের মেয়াদ ইত্যাদি) নির্ধারিত হয়। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলের পক্ষে নতুন শর্ত ও আলোচনার দরকার হবে।
সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা না ফেরান এবং পুরনো অবস্থাই বহাল রাখেন, তখন আনুষ্ঠানিকভাবে আগের সূচি বজায় রাখা যায়। তবে বাস্তবে অনেক দলের অংশগ্রহণ, নীতিগত আপত্তি বা আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সন্ত্রাসভীতি তৈরি হতে পারে। ফলে আনুষ্ঠানিক শুরুর পরও ভোটদান বা নির্বাচনী পরিবেশ প্রভাবিত হতে পারে।
আদালত যদি কেবল-কিছু পর্যবেক্ষণ করেন বা রায়ের ক্ষেত্রে ‘নির্দেশ দেন’ না দিয়ে ব্যাপক তদন্ত বা প্রশাসনিক সংশোধন নির্দেশ করেন, তাহলে বাস্তবে বাস্তবায়ন ও নির্বাচন-পুনর্নির্ধারণে সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস লাগতে পারে। কোথাও ‘এক রাতে’ পরিবর্তন হবে না- আইনি ও সংসদীয় বা প্রশাসনিক ধাপ দরকার হবে।





আপনার মতামত লিখুন
Array