৩০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের দালালি করেছে

তারপরও জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হয় না কেন?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫
তারপরও জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হয় না কেন?

॥ জামশেদ মেহদী ॥
গত ২৭ অক্টোবর সোমবার বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকে মরহুম প্রেসিডেন্ট এরশাদের ফেলে যাওয়া জাতীয় পার্টি সম্পর্কে একটি খবর বেরিয়েছে। খবরটির শিরোনাম, ‘নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির বিষয়ে ফয়সালা হওয়া দরকার’ বলেছেন নুরুল হক নূর। তিনি বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির বিষয়ে ফয়সালা হওয়া দরকার। তিনি বলেন, নির্বাচন বিঘ্নিত হোকÑ আমরা এমন কোনো কাজ চাই না। কিন্তু জাতীয় পার্টির বিষয়ে ফয়সালা না হয়ে যদি আমরা নির্বাচনে যাই, তাহলে আমাদের জন্য শনির দশা অপেক্ষা করছে। জাতীয় পার্টির মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ ব্যাক করবে। নুরুল হল নূর বলেন, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও খুলনাসহ যেসব এলাকা একটু আওয়ামী লীগ হিসেবে পরিচিত, ওইসব এলাকায় জাতীয় পার্টির মাধ্যমেই তারা নির্বাচনে নাশকতা করতে চেষ্টা করবে। আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনকে কলঙ্কিত করতে চেষ্টা করবে। কাজেই জাতীয় পার্টির বিষয়ে নির্বাচনের আগে আমাদের একটা ফয়সালায় যাওয়া দরকার। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেই জিএম কাদের একটা বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি কীভাবে এ দুঃসাহস দেখাতে পারেন এবং বলতে পারেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া নাকি এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এ কথা বলার পর জিএম কাদের কীভাবে ঢাকার রাজপথে তার অফিসে আসেন, তার উত্তরার বাড়িতে অবস্থান করেন।
জাতীয় পার্টি সম্পর্কে আরো মন্তব্য করেছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বানিয়েছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি মানে আওয়ামী লীগ। জাপার ভোটে অংশ নেয়া মানে আওয়ামী লীগের অংশ নেয়া। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের কেউ যেন অংশ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যারা বানিয়েছে, সেই জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসা মানে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসা। জাতীয় পার্টি মানেই আওয়ামী লীগ। সুতরাং জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। জাতীয় পার্টির যেসব নেতা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে নিয়ে আসার কথা বলছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে।
ঐ দিকে নরসিংদীতে অনুষ্ঠিত এনসিপির সমন্বয় সভায় সারজিস আলম বলেন, জাতীয় পার্টির মতো পোষা দল হতে এনসিপির জন্ম হয়নি।
গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির এসব বক্তব্যে কোনো অতিরঞ্জন নাই। শুধুমাত্র এ দুটি দল নয়, সাম্প্রতিক অতীতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, জাগপা প্রভৃতি দল দাবি করেছে যে, যেহেতু জাতীয় পার্টি দীর্ঘকাল ধরে আওয়ামী লীগের দোসর ছিল, দীর্ঘকাল ধরে এ দলটি শেখ হাসিনার সমস্ত কুকর্মে মদদ জুগিয়েছে, তাই এ দলটিকেও অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা উচিত অথবা আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টিরও সমস্ত কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদ-ইনুও হাসিনা সরকারের দালালি করেছে। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের দালালিই নয়, তারা ভারতের দালালিও করেছে। ভারতের প্রত্যক্ষ ও প্রকাশ্য ইঙ্গিতে তারা এদেশে তাদের কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছে। শেখ হাসিনার দালালি এবং দুর্নীতি ও অন্যান্য অপতৎপরতার কারণে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন এবং জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনুকে যদি গ্রেফতার করা হয় এবং আজ পর্যন্ত বছরখানেক কারাভোগ করতে হয়, তাহলে একই অপরাধ করার জন্য জাতীয় পার্টির নেতারা মুক্তবিহঙ্গের মতো চলাফেরা করবেন কেন? কেন তাদের এতদিন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি? কেন এখনো তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না?
জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার সরাসরি বিরোধিতা করেছে বিএনপি। তারা বলেছে, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষপাতী নয় তারা। একটি দলকে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ।
ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করা বা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সময়ও একই ধরনের ঠুনকো যুক্তি দিয়েছিলো বিএনপি। গোটা দেশ যখন ছাত্রলীগের ওপর ভয়ঙ্কর ক্ষুব্ধ ছিলো, দেশের মানুষ যখন ছাত্রলীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাচ্ছিলো, তখনো বিএনপি সেই একই যুক্তি দিয়েছিল। অর্থাৎ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। জনগণ কেমন করে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটি কখনো খোলাসা করে বলেননি বিএনপির কোনো নেতা। অবশেষে গণদাবির প্রতি নতিস্বীকার করে অন্তর্বর্তী সরকার যখন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে, তখন বিএনপি বলে, যে পদ্ধতিতে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তারা ঐ পদ্ধতিতে নিষিদ্ধ করা চায়নি। উল্লেখ্য, একটি নির্বাহী আদেশে সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। তখন বিএনপি বলেছে যে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার বিরোধী বিএনপি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সময়ও একই যুক্তি দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি কিন্তু কোনোদিন এ কথার জবাব দেয় না যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কোন প্রক্রিয়ায়, কোন অথরিটিতে শেখ মুজিবের সরকার শুধু জামায়াতে ইসলামীই নয়, দেশের সমস্ত ইসলামী রাজনীতিই নিষিদ্ধ করেছিলো। সেদিন জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, মুসলিম লীগ প্রভৃতি সমস্ত ইসলাম বা মুসলমান নামধারী রাজনৈতিক দলকে তারা নিষিদ্ধ করেছিলো।
আমাদের জাতীয় কবির নাম কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলাদেশের লাখো মানুষের নামের সাথে ইসলাম শব্দটি জুড়ে আছে। তেমনি পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের অদূরে একটি কলেজ আছে। কলেজটির নাম ছিল, ‘কবি কাজী নজরুল ইসলাম’ কলেজ। ১৯৭২ সালে শেখ মুজিব ক্ষমতায় এসে কলেজের নাম থেকে ইসলাম শব্দটি ছাঁটাই করে নতুন নামকরণ করেন ‘কবি কাজী নজরুল কলেজ’।
এসব মারাত্মক আপত্তিকর কাজ এবং কোনোরূপ আইনকানুন না মেনে এ ধরনের কাজ করার সময় তো কোনো প্রশ্ন তোলা হয়নি যে, সরকারের ইচ্ছামতো এভাবে দল নিষিদ্ধ করা যায় না বা কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ইসলাম শব্দটি খারিজ করা যায় না।
বিএনপি হয়তো বলতে পারে যে, তখন তো তাদের জন্ম হয়নি। কথাটি ঠিক। কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসে এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সালের মে মাস পর্যন্ত ৬ বছর বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো। এরপর ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৫ বছর বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো। শেখ মুজিবের আরোপিত ইসলামী রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রত্যাহার করেন। কিন্তু আজও সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে যে মুসলিম শব্দ ছাঁটাই করা হলো, সেই ছাঁটাই আজও বহাল রয়েছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ২০২৪ সালের ১ থেকে ৫ আগস্টÑ এ ৫ দিন ছাড়া শহীদ জিয়া থেকে শুরু করে গত বছরের ১ আগস্টের আগে পর্যন্ত এই ৪৯ বছর সংগঠনটি অফিসিয়ালি কোনো সময় নিষিদ্ধ ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদল উভয় মিলে বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গায়ের জোরে ছাত্রশিবিরকে স্বনামে কাজ করতে দেয়নি। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের কথা সকলেই জানেন। ছাত্রশিবির না করেও ভারতবিরোধী এবং ইসলামের পক্ষে কথা বলায় তার ওপর পৈশাচিক নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়। কই বিএনপি তো সুদীর্ঘকাল ছাত্রশিবিরের ওপর এ অলিখিত নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেনি।
হিযবুত তাহরীর, আল্লাহর দল, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ইত্যাদি দলের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ সরকারিভাবে উত্থাপিত হয়নি। তারপরও তারা কোন আইনে কোন অপরাধে নিষিদ্ধ? সেগুলোও তো নির্বাহী আদেশেই নিষিদ্ধ রয়েছে। তাহলে সেটি কেমন করে হয়?
১৯৯৬ সালে গঠিত প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে থেকে দোসরের ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে তারা মন্ত্রী হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে (২০০৯-২০১৪) শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় যোগদান করেন বেগম রওশন এরশাদ এবং এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
তৃতীয় মেয়াদে (২০১৪-২০১৮) শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে যোগ দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচএম এরশাদ। মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির আরো যারা যোগ দেন তারা হলেনÑ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মশিউর রহমান রাঙ্গা, জিয়াউদ্দিন বাবলু। আর এ মন্ত্রীদের দলনেত্রী রওশন এরশাদ হন বিরোধীদলের নেতা।
জাতীয় পার্টি এক অর্থে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীতে এরকম ইতিহাসের দ্বিতীয় নজির আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা একই সাথে সরকারেও ছিল আবার বিরোধীদলেও ছিল। আনিসুল ইসলাম, মশিউর রহমান রাঙ্গা, জিয়াউদ্দিন বাবলু প্রমুখ রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রী হয়েছিলেন। আবার সেই রওশন এরশাদ বিরোধীদলের নেত্রীও ছিলেন। রওশন এরশাদের স্বামী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন দলের সুপ্রিম লিডার। আবার তিনি মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত ছিলেন।
জাতীয় পার্টি যেন একটি মাৎস্যকন্যা। রূপকথায় বা সিনেমায় দেখা যায় প্রকাণ্ড একটি মাছ। তার ওপরের অর্ধেক একটি নারী। আর নিচের অর্ধেক একটি মাছ। জাতীয় পার্টিও একই সাথে সরকারের মন্ত্রী এবং বিরোধীদলও বটে।
২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে। তখন পত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিও বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলো। অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছিল যে আওয়ামী লীগ একাই নির্বাচন করছিল। তারা জানতো যে এ ধরনের মাত্র একটি দলের অংশগ্রহণের নির্বাচন অবৈধ তো বটেই, বিশ্বের কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের ত্রাতা হিসেবে ঢাকায় আসেন ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। তিনি এরশাদকে তলব করেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য হুকুম করেন। এরশাদ সুড়সুড় করে সেই হুকুম তামিল করেন।
জাতীয় পার্টির কথা আর কী বলবো? সংসদে বিরোধীদলের নেতা হিসেবে দাঁড়িয়ে রওশন এরশাদ বলেছিলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, লোকে আমাদের গৃহপালিত বিরোধীদল বলে। কেউ আমাদের বিশ্বাস করে না। আপনি আমাদের এ অবস্থা থেকে বাঁচান।’
২০২৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের পোস্টারে লেখা ছিলো, ‘আওয়ামী লীগ-সমর্থিত জাতীয় পার্টি।’ সেই সব পোস্টারে শোভা পেয়েছিলো একই সাথে এরশাদ এবং শেখ হাসিনার ছবি।
২০২৪ সালে এরশাদের ভাই জি.এম কাদের জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে ভারত সফর করেন। দেশে ফিরে এলে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন যে, ভারতে তার কী আলোচনা হয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন যে, সেটি অত্যন্ত গোপন বিষয়। সেটা আপনাদের সামনে বলা যাবে না।
এমন ইতরসুলভ এবং নিকৃষ্ট দালালি আওয়ামী লীগের আর কেউ করেনি। তারপরও শতধাবিভক্ত জাতীয় পার্টির নতুন চেয়ারম্যান বুক ফুলিয়ে বলেন যে, আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
তারপরও তারা বাইরে থাকেন কীভাবে? কেন তাদের লাল দালানে ঢোকানো হয় না? কেন আজও জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হয় না?
Email:jamshedmehdi15@gmail.com

সংবাদটি সোনার বাংলাওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। তথ্যের সঠিকতা ও মালিকানা বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে অনুগ্রহ করে মূল সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।