ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে খানাখন্দ ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

হারুন অর রশিদ মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)
প্রকাশিত: শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে খানাখন্দ ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে খানাখন্দ ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশের স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস থেকে মির্জাপুর উপজেলার কুরনী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এ মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন চলাচল করছে হাজার হাজার যানবাহন। দিন দিন এসব গর্ত আরও বড় ও বিপজ্জনক আকার ধারণ করছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে দ্রুত সংস্কার কাজ না হলে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী ও পথচারীরা।

সরেজমিনে মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলা সদর থেকে হাইওয়ে থানা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন অংশে গর্ত, ঢেউ, কার্পেটিং উঠে যাওয়া এবং পিচ-পাথর সরে গিয়ে রাস্তায় বড় বড় খোয়া ও খাঁজ তৈরি হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে রাস্তা দেবে ঢেউয়ের মতো উঁচু-নিচু হয়েছে। যা দ্রুতগতির যানবাহনের জন্য বড় দুর্ঘটনার ফাঁদ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রাস্তার স্থায়ী সংস্কারের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মোনায়েম গ্রুপ’ কাজ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে বিভাগের পক্ষ থেকে কিছু স্থানে ইট ফেলে অস্থায়ীভাবে খানাখন্দ সংস্কার করা হলেও তা টিকছে না। যানবাহনের চাকার ঘর্ষণে অল্প সময়েই তা আবারো ভেঙে যাচ্ছে। বৃষ্টির সময় গর্তগুলো পানিতে ডুবে থাকায় তা দৃশ্যমান থাকে না। এতে প্রায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। শুধু যানবাহনের ক্ষতি নয়, যাত্রীদেরও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। কাদা পানি ছিটকে যাত্রীদের পোশাক নষ্ট হওয়ার মতো ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২৬টি জেলার যানবাহনের প্রধান রুট এটি। এছাড়াও স্থানীয়ভাবে অসংখ্য মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ ছোট যান চলাচল করে এই মহাসড়কে। বিশেষ করে মির্জাপুর বাইপাস নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার আন্ডারপাসের পূর্ব পাশ থেকে মা সিএনজি স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার এবং দেওহাটা সেতুর পূর্ব পাশের ৩০০ মিটার অংশ খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। সোহাগপুর সেতুসহ বিভিন্ন সেতুর দুই পাশের কার্পেটিং উঠে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যানবাহনের চাকা নষ্ট হচ্ছে অহরহ।

গোড়াইল গ্রামের মোটরসাইকেল চালক মাসুদ মিয়া জানান, আমি মার্কেটিংয়ের চাকরি করি, প্রতিদিন এই মহাসড়ক দিয়ে চলতে হয়। প্রতিনিয়ত গর্তে পড়ে ঝাঁকুনি খেতে হয়। কখন কী হয়, বলা যায় না। রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার করা দরকার। বাসচালক কাদের মিয়া বলেন, গর্তগুলো খুবই বিপজ্জনক। বড় গাড়িতে কম সমস্যা হলেও যাত্রীরা ঝাঁকুনিতে আহত হন। তবে মোটরসাইকেলের জন্য এটা মৃত্যুফাঁদ। স্থানীয় বাসিন্দা বি খন্দকার তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলাম! গোড়াই হাইওয়ে থানার সামনেই মরণ ফাঁদ। এখানে প্রতিদিনই গাড়ির চাকা ফেটে যাচ্ছে।

আমার গাড়ির সামনের ও পেছনের চাকা একসাথে ব্লাস্ট করেছে। গাড়িতে পরিবারসহ দুটি শিশু ছিল। কিভাবে গাড়ি কন্ট্রোল করলাম, সেটা আমি জানি। অথচ হাইওয়ে থানা বা সড়ক বিভাগের কোনো তৎপরতা নেই। মনে হচ্ছে তারা অপেক্ষা করছে কোনো প্রাণহানি ঘটুক!

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মির্জাপুর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মোল্লা বলেন, কুরনী থেকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পর্যন্ত রাস্তার মেরামতের দায়িত্বে আছে মোনায়েম গ্রুপ। কিন্তু তারা কাজ করছে না। বারবার চিঠি দেওয়ার পরও তারা সাড়া দিচ্ছে না। আমরা বিভাগীয়ভাবে অল্প বাজেটে কিছু কাজ করছি। তবে প্রতিদিন বৃষ্টির কারণে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

সংবাদটি দৈনিক আমার দেশওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। তথ্যের সঠিকতা ও মালিকানা বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে অনুগ্রহ করে মূল সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।