টাঙ্গাইলে মায়ের মামলায় ছেলে কারাগারে: মামলার বিষয়ে এখনও অজ্ঞাত মা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
টাঙ্গাইলে মায়ের মামলায় ছেলে কারাগারে: মামলার বিষয়ে এখনও অজ্ঞাত মা

টাঙ্গাইলে জমি নিয়ে বিরোধ ও পারিবারিক কলহের জেরে মায়ের করা মামলায় ছেলে ফজলুল করিম ফরিদ (৫৫) বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

রোববার দুপুরে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফরিদের জামিন আবেদন করলে বিচারক বাদল চন্দ্র কর্মকার তা নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে শহরের পৌর এলাকার সন্তোষ পাতুলি পাড়ায় জমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

তবে ফরিদের স্ত্রী খুরশিদা বেগম অভিযোগ করেছেন, আসল ঘটনায় মা ফজিলাতুন্নেছা কিছুই জানেন না। ছোট ভাইরা প্রতারণার মাধ্যমে তাকে দিয়ে মামলা করিয়েছে।

মামলার ৪ নম্বর সাক্ষী হিসেবে রয়েছে ফরিদের মেজো ছেলে মুক্তাদিরুল করিম রিয়াদ। অভিযোগ রয়েছে, তিনি চাচাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাবার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।

গত ৪ আগস্ট টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফজিলাতুন্নেছা তার বড় ছেলে ফরিদের বিরুদ্ধে সিআর মামলা নং ১৮১৯/২০২৫ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ফরিদ শান্তি বিনষ্টকারী ও ভবঘুরে স্বভাবের। তিনি মাকে প্রায়ই গালিগালাজ ও হয়রানি করতেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ জুলাই সকাল ১১টায় ফরিদ মায়ের বাড়িতে গিয়ে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। পরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা, নগদ এক লাখ দশ হাজার টাকা চুরি, ঘরের টিনের বেড়া ভাঙচুরসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করেন।

ফরিদের স্ত্রী খুরশিদা বেগম বলেন,“শুধুমাত্র আমাদের প্রাপ্য পৈত্রিক সম্পত্তি দিতে না চাওয়ায় আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে জেলে পাঠানো হয়েছে। বার্ধক্যে শান্তিতে থাকার বদলে এখন আমাকে আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, শ্বশুরবাড়িতে দেখা করতে গেলে ননদ ফরিদা আক্তার মুকুল তাকে জানিয়েছেন—“ভাই জেলে আছে” এ কথা জানলে মা হার্ট অ্যাটাক করতে পারেন। এতে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি স্পষ্ট।

এছাড়া খুরশিদা বেগম জানান, তার মেজো ছেলে মুক্তাদিরুল করিম রিয়াদ, যিনি বিমান বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার, তিনিও বাবার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এবং তাকে ও মাকে হুমকি দিচ্ছেন। বর্তমানে পৈত্রিক বাড়ির ১৪ শতাংশ জমিও শ্বশুরবাড়ির লোকজন জোর করে দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি ১৬ সেপ্টেম্বর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ফরিদের ছোট ছেলে রাথিউল করিম বলেন, “আমার বাবা ও চাচাদের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাবা জেলে আর মা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। চাচা নাজমুল করিম গত ২৭ আগস্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরেকটি মামলা (নং ৯০৯/২০২৫) করেছেন, যা ভিত্তিহীন।”

আসামি পক্ষের আইনজীবী মনসুর আহমেদ টিটু বলেন, “এটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও হয়রানিমূলক মামলা। পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের জন্য ফরিদকে ষড়যন্ত্র করে জেলে পাঠানো হয়েছে।”

টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ওসি তানবীর আহাম্মেদ জানান, খুরশিদা বেগম নিরাপত্তার জন্য থানায় জিডি করেছেন। এ সময় তিনি খুরশিদাকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি জটিল হওয়ায় সমাধান সম্ভব হয়নি। তার মতে, “সঠিক তদন্ত হলে আসল ঘটনা প্রকাশ পাবে।”

সংবাদটি দৈনিক আমার সংবাদওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। তথ্যের সঠিকতা ও মালিকানা বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে অনুগ্রহ করে মূল সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।